এটি ছিল আমার প্রথম ভ্রমণ মেলবোর্নে। আমি ছিলাম আমার বন্ধু, একজন সিনিয়র ভাই এবং একজন জুনিয়র ভাইয়ের সাথে। আমরা লেভারটন থেকে একটি ট্রেনে চড়ে ফ্লিন্ডার স্ট্রিটে পৌঁছালাম। ফ্লিন্ডার স্ট্রিটে পৌঁছানোর পর, আমরা একটি ট্রামে চড়ে শ্রাইন অফ রিমেমব্রান্স স্টপে গেলাম।
শ্রাইন অফ রিমেমব্রান্স একটি ঐতিহাসিক স্থান, যেখানে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস অনেক ছবির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমরা সেখানে প্রায় পাঁচটার দিকে পৌঁছালাম এবং ভিতরে যাওয়ার পরিবর্তে প্রথমে বাইরের অংশগুলো ঘুরে দেখলাম।
এই বছর এপ্রিল মাসে, আমি আবারও সেই স্থানে বেড়াতে গিয়েছিলাম আমার মামা ও মামীর সাথে। এবার আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম। শ্রাইন অফ রিমেমব্রান্সের ভিতরে যাওয়ার জন্য কিছু সিঁড়ি চড়তে হয়, কিন্তু একবার উপরে পৌঁছালে, আপনি মেলবোর্ন শহরের সৌন্দর্যকে ভিন্নভাবে দেখতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার মানুষ সবসময় তাদের সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।
তৃতীয়বার যখন আমি সেখানে গিয়েছিলাম, এটি ছিল একটি রবিবারের বিকেল। সেই দিন সেখানে প্যারেড এবং শ্রদ্ধা নিবেদন ছিল। এটি সত্যিই একটি আবেগময় অভিজ্ঞতা ছিল, যেখানে আমরা ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একত্রিত হয়েছিলাম।
এই স্মৃতির ভ্রমণগুলি আমাকে মেলবোর্নের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির গভীরে নিয়ে গেছে এবং আমি আশা করি ভবিষ্যতে আরও অনেকবার সেখানে যেতে পারব।

শ্রাইন অফ রিমেমব্রান্সের ইতিহাস:
শ্রাইন অফ রিমেমব্রান্স, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ, যা প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে। এর নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধের সময় যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তাদের আত্মত্যাগের সম্মান করা।
নির্মাণের ইতিহাস:
নির্মাণের শুরু: শ্রাইনটির নির্মাণ শুরু হয় ১৯২৭ সালে এবং এটি ১৯৩৪ সালে সম্পন্ন হয়। এটি মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সৈনিকদের স্মরণে নির্মিত হয়।
আর্কিটেকচার: শ্রাইনটির নকশা করা হয়েছিল মেলবোর্নের স্থপতি এলিজা ডেভিসের দ্বারা। এটি গ্রিক স্থাপত্যের প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত, যা ঐতিহ্যবাহী এবং মহিমান্বিত একটি ডিজাইন তৈরি করেছে।
উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য:
স্মৃতিস্তম্ভ: শ্রাইনটির কেন্দ্রে একটি বড় স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে, যেখানে যুদ্ধের সময় নিহত সৈনিকদের নাম খোদিত আছে।
সিঁড়ি ও দর্শনীয় স্থান: শ্রাইনটির উপরে ওঠার জন্য সিঁড়ি রয়েছে, যা দর্শকদের মেলবোর্ন শহরের অসাধারণ দৃশ্য দেখতে দেয়।
অভ্যন্তরীণ প্রদর্শনী: শ্রাইনটির অভ্যন্তরে যুদ্ধের ইতিহাসের উপর বিভিন্ন প্রদর্শনী রয়েছে, যেখানে যুদ্ধের সময়কার ছবি, নথি এবং অন্যান্য স্মৃতিচিহ্ন দেখা যায়।
শ্রাইন অফ রিমেমব্রান্স শুধু একটি স্মৃতিস্তম্ভ নয়, বরং এটি অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি প্রতি বছর অস্ট্রেলিয়া দিবস এবং অ্যানজ্যাক দিবসে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
শ্রাইন অফ রিমেমব্রান্স মেলবোর্নের একটি ঐতিহাসিক স্থান, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যুদ্ধের সময়কার সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের কথা। এটি অস্ট্রেলিয়ার জনগণের জন্য একটি গর্বের স্থান, যেখানে তারা তাদের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসে।
লেখক:
ইউনিভার্সিটি অব তাসমানিয়া, অস্ট্রেলিয়া

ড. এস এম নুরুজ্জামান মানিক 






















