সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী ইন্তেকাল করেছে(ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
তিনি দীর্ঘ দিন থেকে বার্ধক্য জনিত রোগে অসুস্থ ছিলেন মর্মে জানিয়েছেন তার জামাতা ও মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সদস্য হাসান আহমদ জাবেদ। মৃত্যুকালে তিনি ৪ কন্যা এবং নাতি-নাতনিসহ আত্মীয় স্বজন রেখেগেছেন।
এবাদুর রহমান চৌধুরী ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪ ইংরেজীতে বর্তমান মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখার গাঙকুল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ৩০ জানুয়ারি ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসেবে সনদ নিয়ে মৌলভীবাজার বারে যোগ দান করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বারের সদস্য হন। আইন পেশায় ছিলেন একজন দক্ষ আইনজীবী।
আইন পেশার পাশাপাশি তিনি বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারি। এক সময়ের জাসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট এবাদুর রহমান নব্বইয়ের দশকে এরশাদ সরকারের আমলে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। তিনি মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের প্রথম মনোনীত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। ১৯৮৮ সালে প্রথম বার চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে তিনি জাতীয়পার্টির প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর দল বদল করে বিএনপিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ ও ২০০১ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে খাদ্য ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে এবাদুর রহমান চৌধুরী ১০ অক্টোবর ২০০১ দায়িত্ব পান এবং এ পদে ২২ মে ২০০৩ পর্যন্ত ছিলেন।
এডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী আশির দশকে মৌলভীবাজার থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জনদূত সম্পাদক ছিলেন। পত্রিকাটি পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে এবায়দুর রহমান চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শোকবার্তা বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও শহীদ জিয়ার নীতি ও আদর্শই ছিল তার রাজনৈতিক জীবনের পাথেয়। গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর ছিল অবিচল আস্থা। তিনি ছিলেন একজন জনঘনিষ্ঠ মানবহিতৈষী রাজনীতিবিদ। সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি দেশ-জাতি ও জনগণের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছেন। দলীয় নীতি ও আদর্শ থেকে তিনি কখনো বিচ্যুৎ হননি। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনার পাাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।