1. chalanbeel.probaho@gmail.com : News :
  2. khokanhaque.du@gmail.com : khokan :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আমার বিশ্বাস শিক্ষার্থীরা আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাবে – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার প্রাণের বাংলাদেশ এভাবে রক্তাক্ত হতে পারে নাঃ শাকিব খান নোংরা রাজনীতির নামে রক্তপাত বন্ধ হোকঃ চঞ্চল চৌধুরী আমার ভাই-বোনদের ওপর কোনো সহিংসতা দেখতে চাই নাঃ মুশফিকুর রহিম চলছে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও ৬ জেলায় বিজিবি মোতায়েন ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখে যেসব ড্রাই ফ্রুটস মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটার বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগের মানব বন্ধন অনির্দিষ্টকালের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে বন্যার্তদের আর্তনাদ
‘সাতদিন ধরি পানিবন্দি হয়্যা আচি, কেউও একবার খোঁজো নিবার আইলো না’

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৯৪ বার পঠিত

‘সাতদিন ধরি পানিবন্দি হয়্যা আচি, কেউও একবার খোঁজো নিবার আইলো না। ছোলপোল, গরু-বাছুর নিয়্যা পোকা-মাকড়ের সাথে যুদ্ধ করে থাকপার নচি। ঘরের চতুর পাকে বানের পানি থৈই থৈই করছে।

ভয়ে ছোল দু’টাক ওর দাদির কাছে থুয়া আচ্চি’। এভাবে নিজ ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বললেন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের জিয়াডাঙ্গা গ্রামের চায়না বেগম (৪০)।

গত শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের জিয়াডাঙ্গা গ্রামে বসবাস করছে ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার। রাস্তাঘাট সব কিছুই পানিতে ডুবে গেছে। হাতে গোনা দশ-বারোটি বাড়ির উঠানে পানি প্রবেশ করতে পারেনি।

কারণ তাদের বসতভিটা মাটি দিয়ে উঁচু করা হয়েছে। কিন্তু চায়নার বাড়ির উঠানে পানি প্রবেশ করায় বেশি বিপাকে পড়েছে এ পরিবারটি। কথা হয় চায়না বেগমের সাথে। তিনি জানান, স্বামী রবিয়াল ইসলাম গ্রামে কৃষি কাজ করতেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে বানের পানিতে তলিয়ে আছে আবাদি জমিগুলো।

কাজকর্ম না থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি। হামার স্বামী ঘুম থেকে উঠেই কাজের সন্ধানে বেরিয়েছে। চার বছরের ছেলে মুছা মিয়া ও সাত বছরের রুমানা আক্তারকে ওর দাদির কাছে রেখে এসেছি। বাড়িতে একাই অবস্থান করছি যাতে কোন কিছু চুরি হয়ে না যায়।

শুধু এ গ্রামের চায়না বেগম নয়, একই অবস্থা কাজলী আক্তার (২৪), আব্দুস সালাম (৩০), ফাতেমা বেগমসহ (৪৫) আরও অনেকের। কাজলী আক্তার বলেন, ‘কষ্টের মধ্যেই চলছে সংসার। পানির মধ্যেই বসে থাকি, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো। চলাফেরা কষ্টেতো, বসার জায়গা নেই, মাচা তৈরি করে রান্নাবাড়ি করছি।

আব্দুস সালাম (৩০) জানান, ‘কয়দিন ধরিয়া খুব কষ্ট করি আচি। রান্নাবান্না নাই, ছোলপোলসহ না খায়া আচি। চেয়ারম্যান, মেম্বাররাতো একবারো খোঁজ নিবার আলো না। হামার দু:খ কষ্ট দেখার কেউ নাই।’

ফাতেমা বেগম (৪৫) বলেন, ‘এই মুর্হুতে খাওয়া-দাওয়ার কষ্টটাই বেশি। চারোপাশে বানের পানির কারণে কোন কাজকর্ম নাই। কারো বাড়িত যায়া যে এ্যনা খাবার আনবো, তারও উপায়ও নাই।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার এরেন্ডবাড়ি, ফজলুপুর, ফুলছড়ি এ তিনটি ইউনিয়ন একবারে চরাঞ্চলে অবস্থিত। অবশিষ্ট গজারিয়া, উদাখালী, উড়িয়া ও কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা চরাঞ্চলে পড়েছে। অব্যাহত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ার কারণে উপজেলার ৩৫টি গ্রামের প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে বলে জানান ফুলছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: শহীদুজ্জামান শামীম।

এছাড়া আমনের ক্ষেতসহ ১২০ হেক্টর জমির শাক-সবজি ও অন্যান্য ফসল তলিয়ে গেছে। গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলী খান বলেন, ‘ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব বানভাসি পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে বন্যা কবলিত পরিবারগুলোর মাঝে তা বিতরণ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিসুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বন্যা মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের পূর্ব প্রস্ততি রয়েছে। ইতিমধ্যে ২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। বন্যা কবলিত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও জিআর-এর চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত