দেশে ৩৫ শতাংশ মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং তামাকজনিত রোগে প্রতিবছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যান। দেশে প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে মোট মৃত্যুর ২৫.৫৪ শতাংশ এবং নারীদের মৃত্যুর ৯.৭ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক। যা উন্নয়নশীল যে কোন দেশের চেয়ে তামাকজনিত গড় মৃত্যুও চেয়ে বেশি। দেশে বর্তমানে ত্রিশোর্ধ ৭০ লাখের বেশি মানুষ তামাক সেবনজনিত রোগে আক্রান্ত, যাদের চিকিৎসা ব্যয় তামাক খাত থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের চেয়ে বেশি। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ১৫ বছরের কমবয়সী ৪ লাখ ৩৫ হাজার শিশু তামাকজনিত নানা রোগে আক্রান্ত, যার মধ্যে ৬১ হাজারের বেশি নিজ বাড়িতে পরোক্ষ ধুমপানের শিকার। বিশ্বে মোট তামাকের ১.৩ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপন্ন হয় এবং তামাক চাষে ব্যবহৃত জমির মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। তামাকের চাষাবাদে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে।
বুধবার বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তাদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মলয় কুমার কুন্ডু। তামাক আইন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আমীর হামজা, পরিদর্শক (তদন্ত) সরল মুরমু, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রউফ।
কর্মশালায় বক্তারা আরো বলেন, বিশ্বে তিন কোটি ৭০ লাখ কিশোর-কিশোরী নিয়মিতভাবে তামাক ব্যবহার করে। আমাদের দেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯.২ শতাংশ। অতিথিরা বলেন, আবাদী জমি এবং তামাকজনিত মৃত্যু থেকে রক্ষা, সর্বোপরি শিশুদের সুরক্ষা প্রদানে তামাক নিরোধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। এই লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সামাজিকীকরণ অর্থাৎ ধর্মীয় অনুভ‚তি প্রদান, শিল্প-সাহিত্য ও ক্রীড়া চর্চায় নিয়োজিত করার উপর বক্তারা গুরুত্ব আরোপ করেন।