২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে আশুলিয়া থানার সামনে ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গুলিতে গুরুতর আহত হন একজন। এই মরণাপন্ন আহত ব্যক্তি ও পাঁচজনের মৃতদেহ প্রথমে একটি প্যাডেল ভ্যানে তোলা হয়। পরে ওই ভ্যান থেকে তোলা হয় পুলিশের একটি গাড়িতে। এক পর্যায়ে ওই গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় । এই ঘটনায় শহীদ হন- সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ , আবুল হোসেন ও একজন অজ্ঞাত ব্যাক্তি। উক্ত ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্যকর মামলা এখনো চলমান এবং স্বাভাবিকভাবেই দেশব্যাপী আশুলিয়া থানা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। ইতোমধ্যে, আশুলিয়া থানাও দফায় দফায় পরিবর্তন হয় বেশ কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
৫ই আগষ্টের পরে এখন পর্যন্ত মোট চারজন ওসি বদলী করা হয়েছে। তারা হলেন- ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক, নুরে আলম ফকির, মনিরুল ইসলাম ডাবলু ও সোহরাব আল হোসাইন। সূত্র মতে, যে সকল ওসি পরিবর্তন করা হয়েছে প্রত্যেকটির কোনো না কোনো বিশেষ কারণ রয়েছে। কিন্তু আশুলিয়ার কিছু সাংবাদিক এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সাথে উল্লেখিত ওসিদের বনিবনা না হওয়াটাই মূল কারণ হতে পারে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
তারপর ২০২৫ সালের ২৫ শে জুন সর্বশেষ আশুলিয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসাবে যোগদান করেন আব্দুল হান্নান। তিনি যোগদানের পরেই আশুলিয়া থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে আমুল পরিবর্তন এসেছে।
ওসি আব্দুল হান্নান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছেন। চাঁদাবাজি ও দখলবাজির বিরুদ্ধে অভিযানে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিকেও আইনের আওতায় এনেছেন। আশুলিয়া থানার ৫ টি আবাসিক হোটেলে আসামাজিক কার্যকলাপ সফলভাবে বন্ধ করতেও সক্ষম হয়েছেন। ফলে এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু সেই স্বস্তি কোনো বিশেষ মহলের কাছে অস্বস্তির কারণও হতে পারে।
আশুলিয়া থানায় কাজ করতে এসে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ এর মুখোমুখি হচ্ছেন কিনা, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান দৈনিক চলনবিল প্রবাহকে বলেন, “পুলিশের চাকুরীটাই একটা চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি জনবসতিপূর্ণ থানা হিসেবে এখানে তো একটু বেশি চ্যালেঞ্জ থাকবেই।”
৫ আগস্টের পর আশুলিয়া থানায় ৪ জন ওসি’র বিদায় এবং তাদের এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে না পারার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, “এর কারণ অনেক কিছুই হতে পারে। তবে আমি বলবো ইনশাআল্লাহ আমি স্বাচ্ছন্দ্যে সম্মানের সহিত এই থানা থেকে বিদায় নিবো।”
নিজের সম্পর্কে প্রশংসা এবং কিছু অভিযোগ- এই মিশ্র প্রতিক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে ওসি আব্দুল হান্নান বলেন, “দোষ গুণ মিলিয়ে মানুষ। যারা অভিযোগ করছে, তারা হয়তো আমার কাছ থেকে সুযোগ নিতে পারেনি। অপরদিকে যারা প্রশংসা করছে তারা বলতে পারবে কি কারণে এই প্রশংসা”।
ওসি আব্দুল হান্নানের উত্তরগুলোতে সুস্পষ্ট একটা অভিমান অনুভব করা গিয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন অভিযোগ যাচাই বাছাই না করে গণ হারে সরকারি কর্মকর্তাদের বদলী প্রশাসনিক ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিতে পারে ।

অনলাইন ডেস্ক 


















